Hot Posts

6/recent/ticker-posts

ক্ষমতা বলতে কি বোঝো? ক্ষমতার উপাদানগুলি বিশ্লেষণ করো। অথবা, ক্ষমতা কাকে বলে? ক্ষমতার উপাদানগুলি বিশ্লেষণ করো।



ক্ষমতা বা শক্তির সংজ্ঞা:

আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে শক্তি বা ক্ষমতার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আন্তর্জাতিক রাজনীতির মুখ্য উপাদান হলো শক্তি। সাধারণভাবে সত্যিই বা ক্ষমতা বলতে কোন কিছু করার সামর্থ্য কে বোঝায়। কিন্তু আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে তা অন্য অর্থে ব্যবহৃত হয়। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিচারক হান্স জে মর্গেনথাউ তার Politics Among Nations গ্রন্থে শক্তি বা ক্ষমতার সংজ্ঞা নির্দেশ করতে গিয়ে বলেছেন, শক্তি বা ক্ষমতা বলতে অন্যের মন ও কাজের উপর নিয়ন্ত্রণ কে বোঝায়। তার মতে, এক জাতির মন ও কাজের উপর অন্য জাতির ক্ষমতা বা শক্তি প্রয়োগ হল জাতীয় শক্তি।

ক্ষমতা বলতে কি বোঝো? ক্ষমতার উপাদানগুলি বিশ্লেষণ করো। অথবা, ক্ষমতা কাকে বলে? ক্ষমতার উপাদানগুলি বিশ্লেষণ করো।

শক্তি বা ক্ষমতার উপাদান: 

1. ভৌগলিক উপাদান: আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশারদ মর্গেনথাউ এর মতে, ভৌগোলিক উপাদান হল এমন এক স্থায়ী উপাদান যার উপরে কোনো জাতির শক্তি নির্ভরশীল। ভৌগোলিক উপাদানের মধ্যে রয়েছে দেশের অবস্থান, আয়তন, ও ভূপ্রকৃতি এবং জলবায়ু।

2. জনসংখ্যা: জনসংখ্যা বা মানব সম্পদ জাতীয় শক্তির অন্যতম নির্ণায়ক উপাদান। প্রতিরক্ষা, আর্থিক বিকাশ এবং দেশ গঠনের ক্ষেত্রে শক্তিশালী, দক্ষ ও শিক্ষিত জনগণের কার্যকরী ভূমিকা রয়েছে। অনেকের মতে, অর্থনৈতিক সম্পদের ব্যবহার ও আর্থিক বিকাশের জন্য জনসংখ্যা যেমন প্রয়োজন, তেমনি অতিরিক্ত জনস্ফীতিও আবার অর্থনৈতিক অবনমন ডেকে আনে।

3.প্রাকৃতিক সম্পদ: আধুনিক বিশ্বে কোন দেশকে শক্তিশালী দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে গেলে তাকে অতি অবশ্যই প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ হতে হবে। আধুনিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় উচ্চ মানের ইস্পাত, খনিজ তেল, ইউরেনিয়াম প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদের অত্যন্ত প্রয়োজন। প্রাকৃতিক সম্পদ হিসেবে কৃষিজ দ্রব্য ও খাদ্যশস্যের ও একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। খাদ্যশস্যে স্বয়ম্ভরতা অর্জন কোন একটি দেশের জাতীয় শক্তি ও সামর্থ্য অর্জনের ক্ষেত্রে সহায়ক উপাদান হিসেবে স্বীকৃত। প্রযুক্তি বিদ্যার বিকাশ, শিল্প উন্নয়ন ইত্যাদি জন্য প্রাকৃতিক সম্পদের প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। 

4. অর্থনৈতিক সামর্থ্য: অর্থনৈতিক সমর্থ্য ছাড়া কোন দেশের পক্ষে জাতীয় শক্তিকে সমৃদ্ধ হওয়া সম্ভব নয়। বর্তমান বিশ্বে শিল্পোন্নত দেশগুলি এই কারণে জাতীয় শক্তির দিক থেকে সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছে। বস্তুত যেকোনো দেশের অর্থনৈতিক বিকাশের হার অনুকূল না হলে তার পক্ষে মানবসম্পদ ও প্রাকৃতিক সম্পদের সদ্ব্যবহার করা সম্ভব নয়। তাছাড়া এই সম্পদকে কাজে লাগানোর জন্য প্রযুক্তি বিদ্যার জ্ঞান প্রয়োজন। এই প্রযুক্তি বিদ্যাগত জ্ঞানের অভাবনীয় উন্নতি ঘটিয়ে জাপান বর্তমানে নিজেকে অর্থনৈতিক দিক থেকে শক্তিধর রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ